মরিয়া গিয়াছে জোগা বনিতো (শেষ পর্ব)

ব্রাজিলের জেতা ৫টি বিশ্বকাপের মধ্যে সবচেয়ে নন গ্ল্যামারাস বলা যেতে পারে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপটিকে। ১৯৭০ সালের পরে ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং ১৯৭০ এর মতই এবারও সামনে ইতালি। কিন্তু ১৯৭০ সালে যেখানে ব্রাজিল বিশ্বকাপ শেষ করেছিল ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলে আর কার্লোস আলেবার্তোর যুগান্তরী গোলে এবারে বিশ্বকাপের শেষ হল ইতালিয়ান কিংবদন্তী রবার্তো বাজ্জিওর যুগান্তরী সেই পেনাল্টি মিস দিয়ে। ১৯৭০ এর “জোগা বনিতো” যুগের খেলোয়ার মারিও জাগালো এবার ব্রাজিলের কোচ আর ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ যিনি উচিয়ে ধরেছিলেন সেই কার্লোস দুঙ্গা আপনার এই দুইজনকেই মনে রাখতে হবে যদি আপনি “জোগা বনিতো” এর মৃত্যুর ঘটনাটা বুঝতে চান ঠিকভাবে।

১৯৯৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপ তো জিতল। কিন্তু এই ব্রাজিলকে যদি আপনি “জোগো বনিতো” ব্রান্ডের ফুটবল খেলা মারিও জাগালোর ব্রাজিল মনে করে থাকেন তাহলে আপনি ভুল করছেন। এই ব্রাজিল যতটা জাগালোর তার চেয়েও বেশি দুঙ্গার। কার্লোস দুঙ্গা ব্রাজিলিয়ান হিসাবে খুবই বেমানান এক চরিত্র। একে তো নো ননসেন্স ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার তার উপরে খেলোয়াড়ি জীবনের বেশিরভাগ কাটিয়েছেন পাঁড় ইটালিয়ান ট্যাকটিক্সের ছকে নিজেকে তৈরি করে। সেটা করেছিলেন বলেই ইউরোপের “আটকে দেয়া” ট্যাকটিক্স সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছিল দুঙ্গার। দুঙ্গার এই ব্রাজিল জিকো বা ফ্যালকাওদের ব্রাজিল নয়। যেদিন আক্রমণাত্বক ফুটবল কাজ করত না সেদিন এই ব্রাজিল বিশ্রী কিন্তু ফলদায়ী ফুটবল খেলতে জানত। ওই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বই যা আক্রমণাত্নক। নক আউটের প্রতিটি ম্যাচ ব্রাজিল জিতেছিল মাত্র ১ গোলের ব্যবধানে এবং প্রতিবারই খেলার সৌন্দর্য্যের চেয়ে বেশি দেখাতে হয়েছিল দাঁতে দাঁত চেপে ম্যাচ বের করে আনার দৃঢ়তা। আধুনিক ফুটবলে সাফল্য পেতে এই মানটা আপনাকে দেখাতে হবেই। কিন্তু এই মান কিন্তু ব্রাজিলের মান নয়। এই মান ইউরোপের মান। ‘৯৪ এর ব্রাজিল দল তাই যতটা বিশ্বমানের বিশ্বকাপ জয়ী দলের ছাচে গড়া, ততটাই অব্রাজিলীয় তাদের খেলার ধরণ কিংবা তাঁদের জয়ের পথ। গোলের জন্য কেবলই রোমারিও বেবেতোর দিকে তাকিয়ে থাকা কিংবা ম্যাচ বের করে আনতে ক্লদিও তাফারের গ্লাভসে ভরসা করে থাকা- এই ফর্মুলাতেই হয়তো লেখা ছিল জোগো বনিতোর মৃত্যুর ফরমান।

1994 FIFA World Cup™ - News - Brazil back on top in football's final frontier - FIFA.com

দুঙ্গা, রোমারিও, বেবেতোদের বিশ্বকাপ তুলে ধরা থেকেই জোগো বনিতোর মৃত্যুর শুরু (ছবিঃ FIFA.com)

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ১৯৯৪ সালেই যদি মারা গিয়ে থাকে “সুন্দর ফুটবল” তাহলে আজ এত বছর পরেও সেই মরীচিকা নিয়ে আমাদের মোহ কেন কাটে নি? কেন আজ ও পত্রিকার পাতায় আর সাংবাদিকতার পরতে পরতে আশার কথা শোনানো হয় ব্রাজিলের সুন্দর ফুটবলের ফুল হয়ে ফোটা নিয়ে? কেনই বা কিশোর কোন ব্রাজিলিয়ানের পায়ে বল পায়ে ঝলক দেখলেই আশায় বুক বাধেন সমর্থকেরা- এই বুঝি ফিরল স্বর্ণযুগ? 

এর জন্য দায়ী মূলত ব্রাজিলের ৯০আর ০০ এর দশকে উঠে আসা আরেকদল যুগান্তরী প্রতিভা। ৯৪ বিশ্বকাপ যখন চলছে তখনি ব্রাজিলের দুই বিখ্যাত R রোনালদো লিমা আর রিভালদো নাম করতে শুরু করেছেন। রোনালদো তো ৯৪ বিশ্বকাপের স্কোয়াডেই ছিলেন। এরা যখন কয়েকটা মৌসুম ব্রাজিলের ঘরোয়া লীগে কাটিয়ে ইউরোপে এলেন ইউরোপ আবারো চমকে উঠল ব্রাজিলিয়ানদের নতুন প্রজন্মের ঝলকানিতে। প্রকৃতিপ্রদত্ত প্রতিভার সাথে সাথে এই প্রজন্মের খেলোয়াড়েরা ছিলেন শারীরিকভাবে শক্ত সমর্থ এবং ইউরোপের বিশালাকৃতির ডিফেন্ডাররাও হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলেন সদ্যই ২০ পেরুনো এই তরুণ প্রতিভাদের আটকে দিতে। তার কিছুদিন পরেই লাইমলাইটে এলেন রবার্তো কার্লোস আর কাফু। আক্রমণমুখী ফুল ব্যাকদের প্রচলিত ধারণাটাকে চ্যালেঞ্জ করে এই দুইজন হয়ে উঠলেন ফুলব্যাকদের ই পালাবদলের নমুনা। সব মিলিয়ে ৯৮ বিশ্বকাপে যে ব্রাজিল দলটি গেল তারা যেন ঘোষনা দিয়েই রাখল -ফিরবে আবার জোগো বনিতো। 

৯৮ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয় রোনালদোর রহস্যময় অসুস্থতার বলি হয়ে আর জিনেদিন জিদানের জাদুকরি নৈপুণ্যের দর্শক হয়ে ফাইনালে হেরে। কিন্তু ২০০২ বিশ্বকাপে রোনালদো রিভালদোর সাথে রোনালদিনহো যুক্ত হয়ে এনে দেন আরো একটি বিশ্বকাপ। এই দুই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সেই বিখ্যাত “মনের আনন্দে খেলা” খেলোয়াড় যেমন স্কোয়াডে অনেক ছিল, সেরকম রোনালদিনহোর সেই বিখ্যাত ফ্রি কিক এর মত অবিশ্বাস্য মূহুর্ত ও ছিল অনেক। কিন্তু খেলা যারাই দেখেছেন তারা সবাই জানেন যে জয়ের কোটা পূরণ হলেও “জোগা বনিতো” আর ফেরেনি। এই দুইটি বিশ্বকাপেই ব্রাজিল মূলত খেলেছে ৪-৪-২ এবং ৪-৩-৩ এর মিশেলে। আক্রমণাত্বক ফর্মেশান নিঃসন্দেহে কিন্তু ব্রাজিলের খেলা এই দুই বিশ্বকাপে যতটা ল্যাটিন ফুটবলের প্রতিনিধিত্ব করেছে তার চেয়ে বেশি করেছে ইউরোপিয়ান গোছানো ফুটবলের জয়গান। লাইন আপে দুঙ্গার মত নো ননসেন্স মিডফিল্ডারের রোলে জে রবার্তো কিংবা এমারসনদের উপস্থিতি নিয়ে হয়তো উচ্চবাচ্য হয়না বেশি, হয়তো আড়ালেই থেকে যায় এই দশকে  ব্রাজিলের হয়ে গোলপোস্টের নিচে দাঁড়ানো মার্কোস বা দিদাদের বীরত্ব কিন্তু এই দশকে ব্রাজিল খেলেছে ইউরোপের মতই। আরো pin point করে বললে ১৯৯৪ এর ব্রাজিলের মত। কিছু মুহুর্তে “ল্যাটিন ঝলক” হয়তো তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করেছে ঠিকই, হয়তো ওভারল্যাপিং ফুলব্যাকদের আক্রমণভাগের ই অংশ হয়ে যাওয়া একটু আধটু চমকেও দিয়েছে ইউরোপিয়ানদের- কিন্তু “মনের আনন্দ” দ্বিতীয় স্থানে চলে গিয়ে “জয়” হয়ে উঠেছে মূল উপজীব্য। তাই এই যুগের ব্রাজিল সমর্থকেরা যতই বলুন তাঁরা “সুন্দর ফুটবল” দেখে ব্রাজিলের প্রেমে পড়েছেন, সত্যটা হচ্ছে “বিজয়ী” ব্রাজিল তাদের মনে দাগ কেটেছে অনেক অনেক বেশি।

ইউরোপের ঘরাণায় খেলে ব্রাজিলের এই সাফল্যে তার পরেও একটা ল্যাটিন ছাপ পাওয়া যেত মূলত আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের কারনে। রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহোরা নিজেদের ক্যারিয়ারের শুরুতে একাধিক মৌসুম ব্রাজিলে খেলেছেন। আয়ত্ব করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ধরনটা। রোনালদিনহো তো খেলেছেন স্ট্রিট ফুটবল ও। এরপর প্রথমে ছোট ইউরোপিয়ান ক্লাবে নিজেদের প্রমাণ করে এসেছেন বড় কোন ইউরোপিয়ান দলে। ট্যাকটিক্স বা নিয়মের বেড়াজালে এই খেলোয়াড়েরা বাধা পড়েননি তাই পুরোপুরি কখনোই। পেলে বা গ্যারিঞ্চাদের মত খেলেছেন বা জীবনযাপন করেছেন “ব্রাজিলিয়ান” আর দশটা তরুণের মতই। এদের প্রত্যেকের নামের শেষেই তাই পার্টি কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের তকমা লেগেছে আর প্রত্যেকের ই ক্যারিয়ার শেষে সঙ্গী হয়েছে আক্ষেপ যে এরকম অতলান্তিকের মত গভীর প্রতিভা নিয়েও হয়তো কেউ ই পৌছাতে পারেননি ক্যারিয়ারের চুড়ায়। রোনালদো কখনো চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতেননি, রিভালদো দিতে পারেননি নেতৃত্ব আর রোনালদিনহো হারিয়ে গেছেন মাত্র কয়টা ভাল বছর শেষেই। 

কিন্তু এর পরের জেনারেশানের ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাদের গল্পটা আবার ভিন্ন। ব্রাজিলিয়ানদের সাফল্য আর ফুটবলের বিশ্বায়ন এরপর ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোকে একরকম বাধ্য করেছে অর্থের সাশ্রয় করতে আরো কম বয়সে ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাদের বড় বড় ইউরোপিয়ান ক্লাবে নিয়ে আসতে। কাকা, আদ্রিয়ানো, রবিনহো বা লুইস ফ্যাবিয়ানোরা তাই ২০ এর গন্ডি পেরোতে না পেরোতেই নিজেদের আবিষ্কার করেছেন ইটালিয়ান বা স্প্যানিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কাকার মত যারা দ্রুত মানিয়ে নিতে পেরেছেন তারা টিকে গেছেন আর যারা মানসিকভাবে ব্রাজিলের বাতাসটাতেই দম নিতে চেয়েছেন ইউরোপের মাটিতে তারা পারেননি আদ্রিয়ানোর মত। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ পর্যায়ে যত Marque খেলোয়াড় এসেছেন তাদের মধ্যে কাকা সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ইউরোপিয়ান ঘরাণার। পায়ের কাজ কিংবা পাস দেবার অতিপ্রাকৃত ব্রাজিলিয়ান ক্ষমতা তার ছিলই, কিন্তু কাকাকে বিশ্বসেরা বানিয়েছিল খেলাটাকে বাহুল্যবর্জিত এবং Direct Approach এ দেখার প্রবণতা। অদরকারী ভাবে বল পায়ে না রাখা, ড্রিবলিং এর উপর দখল সত্ত্বেও তিন চারজন ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে লম্বা পাস বাড়ানোর প্রবণতা এবং ফুসফুসকে চ্যালেঞ্জ করা গতি- যে কোন ইউরোপিয়ান নাম্বার ১০ থেকে কাকাকে আলাদা করতে কষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর নাম্বার ৯ এ রোনালদোর পর ব্রাজিলের হয়ে যারাই খেলেছেন তারা কেউ ই বল পায়ে আগের যুগের স্ট্রাইকারদের মত নন। বরং ইউরোপের পাওয়ার স্ট্রাইকারদের সঙ্গে ব্রাজিলের ৯ নাম্বার জার্সিধারীদের মিল যে প্রতি বছর বাড়ছে সেটা প্রায় না তাকিয়েও বলে দেয়া যায়।

Neymar will win Ballon d'Or, Tite has given Brazil an identity - Scolari | Goal.com

স্কোলারি ব্রাজিলকে নিয়ে বিশ্বকাপে গেছেন দুইবার। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে দুইবারের ফলাফল হয়েছে পুরোপুরি ভিন্ন। (ছবিঃ Goal.com)

কার্লোস দুঙ্গা বা লুই ফিলিপ স্কোলারি মিলে তিনটি বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে কোচিং করিয়েছেন। এরা দুজনেই ভয়াবহ প্র্যাগম্যাটিক কোচ। ছকে বাধা ফর্মেশান বা নিয়মতান্ত্রিকতার বেড়াজালের সাথে Marque খেলোয়াড়দের ইউরোপিয়ান এই বিবর্তন মিলিয়ে ব্রাজিলের “জোগো বনিতো” লুকিয়ে যেটুকু বেচে ছিল তাও কোমায় চলে যায় ২০১০ এর দশকের শুরুতে। ২০১০ বিশ্বকাপের ব্রাজিলকে তাই আর ১৯৭০ সালের “জোগা বনিতো” ব্রাজিলের সাথে মিলানোর কোন সুযোগ ই থাকত না যদি না জার্সির রঙ একই না হত।

২০১০ থেকে ২০২১ সালের ব্রাজিলকে যারা দেখেছেন তারা অনেকে নেইমারের মধ্যে পুরাতন আমলের ব্রাজিলিয়ান Merque প্রতিভাদের খুজতে চেষ্টা করেন। বেশ কিছুদিন ব্রাজিলে খেলা বা বল পায়ে রাখার প্রবণতায় সেটাকে একদম মিথ্যাও বলা যায় না। কিন্তু ফুটবল নিজেই বদলে গিয়েছে মেসি-রোনালদো যুগে। এখন আর “জোগো বনিতো” প্রোটোটাইপে আপনি বিশ্বসেরা খেলোয়াড় তৈরি করতে পারবেন না। এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে ভাল ফুটবলার হতেই আপনাকে টিন এজ পার হবার আগেই চলে আসতে হবে ইউরোপের একাডেমিতে, খেলতে হবে বড় কোন দলে এবং বয়স যাই হোক পারফর্ম করতে হবে ফলাফল আনতে। আপনি এখন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে মৌসুমে ২০ গোল করে নিজের কিংবদন্তীত্বের দাবী জানাতে পারবেন না। আপনাকে হতে হবে মেশিন আপনাকে হতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার তীব্র প্রতিক্রিয়ার সামনে অটল অবিচল। এখনকার যুগকে তাই বলা যায় ব্রাজিলের ফুটবলের আত্মপরিচয়ের সন্ধানের যুগ, বলা যায় নিজেদের হারিয়ে খোজার যুগ। ব্রাজিল ১৯৯৪ সালেই জেনে গিয়েছিল “মনের আনন্দে খেলা” তাদের সফল করে তুলবে না। ইউরোপিয়ানদের খেলায় ইউরোপিয়ানদের হারিয়ে দেয়া “নো ননসেন্স” দুঙ্গা যুগটাও ফিকে হয়ে আসছে কারণ ব্রাজিলের এই যুগের খেলোয়াড়েরা যেভাবে বড় হচ্ছেন জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে গিয়ে দেখছেন ল্যাটিন ফুটবল দাবী করছে অন্য কিছু। ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবল বিশ্বায়নের প্রভাবে আর অল্প বয়সেই সেরা খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়ে পিছিয়েছে অর্থে, পিছিয়েছে মানে। আর দর্শকেরা না পাচ্ছেন ব্রাজিলের সেই সুবাস না পাচ্ছেন বিজয়ের টানা স্বাদ। সব মিলিয়ে জোগো বনিতোর মৃত্যু যে হয়ে গেছে ২৫ বছর আগে তার ছাপ মাত্র পড়তে শুরু করেছে ব্রাজিলের ফুটবলের গায়ে। 

সত্যি বলতে কি এই যুগ যে কঠিন দাবী করে একজন ফুটবলারের কাছে, তা পূরণ করতে গিয়ে আপনি আর মনের আনন্দে খেলতে পারবেন ই না। আপনাকে দুঙ্গার মত নো ননসেন্স হতে হবেই। একজন দুঙ্গা বা একজন যে রবার্তোকে ছাড়া রোনালদো যেমন সফল হতেন না, একজন ফিলিপে মেলো পারেননি বলে কাকা যেমন হতাশ হয়ে মাঠ ছেড়েছেন সেরকমই একজন ক্যাসেমিরোকে বাদ দিয়ে নেইমার এই যুগে সাফল্য পাবেন না। ফুটবল এখন একই সাথে Beauty and Beast ফুটবল এখন একই সাথে Blue এবং White Collar খেলা, ফুটবল এখন বড়ই ফলমূখী। তার পর ও মৃত জোগো বনিতো হয়তো টিকে থাকবে নেইমারের রেইনবো ফ্লিকে কিংবা ফিরমিনোর No Look Pass এ। কিন্তু এই বেঁচে থাকা খসে পড়া তারার হুট করে দেখে ফেলা একটা ঝলকের মত। জোগো বনিতো এখন বড় শহরে নাম না জানা কিন্তু পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া পথচারীর মত। ক্ষণিকের জন্য দেখা হবে কিন্তু পরিচয় হবেনা আর। বেচে থেকেও হয়তো তাই- “মরিয়া গিয়াছে জোগা বনিতো”। (সমাপ্ত)

You May Also Like